Friday, January 16, 2009

শুক্রবারের সন্ধ্যালিপি : বিড়াল, অতুল, বাবা, প্রেস্তো

শুনতে পাচ্ছি আমার মা আপন মনে বকবক করে যাচ্ছে জন্মনিয়ন্ত্রণজ্ঞানশূন্য সাড়ে চার বছর বয়সী বিড়ালের সাথে যে সম্প্রতি তিনটি বাচ্চা জন্ম দিয়েও সান্ধ্যকালীন বিস্কিট খাওয়ার লোভে নির্বিকার ভঙ্গিতে ম্যাও ম্যাও কর তার পায়ের কাছে।

ম্যাও ম্যাও ছাপিয়ে হেডফোনে শুনতে পাচ্ছি, আজ আমার শূন্য ঘরে আসিল সুন্দর, ওগো অনেক দিন পর; বহুবার শোনা অতুলপ্রসাদ সেনের গান। এ গান তাঁর মামাতো বোন হেমকুসুমকে লেখা, যাকে বিয়ে করেছিলেন, যদিও থাকতেন আলাদা বাড়িতে, একই শহরে; দাম্পত্য জীবনের টানাপোড়েনে কালেভদ্রে একসাথে থাকার সময় হয়তো লেখা এ গান। ইত্যাদি।

দেখতে পাচ্ছি, অন্যমনস্ক বাবা আমার, যার সাথে আমার কথা হয় না দীর্ঘদিন, বাথরুম থেকে বেরুবার সময় যথারীতি বাতি নেভায়নি, হয়তো এখন টিভি অন করে ভলিউম বাড়িয়ে সোফায় শুয়ে কোনো বই পড়তে পড়তে তন্দ্রাচ্ছন্ন হবে।

রুশ বান্ধবী লিলিয়ার অনুরোধে টরেন্ট দিয়ে ঢিমেতালে ডাউনলোড হচ্ছে দ্য রিটার্ন সিনেমা। তার প্রিয় এই সিনেমা ভেনিস উৎসবে শ্রেষ্ঠ ছবির পুরস্কার পায় ২০০৩-এ। লিলিয়া আচ্ছন্ন সোভিয়েত সময় নিয়ে, এখনকার রাশিয়ার কিছুই ভালো লাগে না তার; না সিনেমা, না বোলোগনা পদ্ধতির পড়াশোনা। তার ভালো লাগে দস্তয়ভস্কি, সার্ত্রে, কামুর লেখা যদিও তার ডিপ্লোমার বিষয় ব্যাংক ঋণের ধরন-প্রকরণ। ইদানীং বেশি শুনছে হাবিব ওয়াহিদের বাংলা গান "ভালো বাসবো বাসবো রে বন্ধু"।

আর আমার পছন্দ রাশিয়ার ত্রেপাক নাচের সাথে বাজানো প্রেস্তো লয়ের অর্কেস্ট্রা সঙ্গীত। যেমন পছন্দ আমার সবচেয়ে প্রিয় সাড়ে চার বছর বয়সী বিড়ালটি, যে নিষ্ঠার সাথে উদাসীন ভঙ্গিতে ম্যাও ম্যাও করে যাচ্ছে দুটি টিপ বিস্কিট খেয়েও।

_________________________________________
- ইশতিয়াক জিকো / ১৬ জানুয়ারি ২০০৯, ঢাকা

No comments:

Post a Comment