Friday, August 1, 2008

গল্প : ফোনসঙ্গমের সম্ভাব্য জটিলতা

শাওন মাসের তেরো তারিখ রাত দেড়টায় ফোনসঙ্গম শেষে মুনতাহা মুরশেদের নকিয়া এন৯৫ মোবাইল থেকে একটি ফুটফুটে বাচ্চা বের হয়। প্রযুক্তির এই উদ্ভট রসিকতায় বা উৎকর্ষতায় মুগ্ধ না হয়ে মুনতাহা মুরশেদ উল্টো ভয় পায় যেহেতু তার পিরিয়ড চলছিল। মুনতাহার ভয় পাওয়ার আরও কারণ থাকতে পারে যা তার ঘুমন্ত স্বামীর জানার কথা নয়। অফিসফেরত ক্লান্ত স্বামী সুলতান মুরশেদ ঘুমিয়ে গেলেই মুনতাহা এমন সম্পর্কের ডানা মেলে নকিয়া এন৯৫ ফোনে। এবং দিনতারিখ ভুল না করলে মুনতাহার মনে পড়ে ঠিক এক বছর আগের কথা যেদিন স্টার প্লাসে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এই ফোনের বিজ্ঞাপনটি প্রথম দেখানো হয়। বিজ্ঞাপনটি দেখার পর মুনতাহার স্বামী নিজ উদ্যোগেই মালয়শিয়া থেকে এই ফোন তার জন্য কিনে আনে। কিনে আনার কারণ না জানলেও ক্ষতি নেই যেহেতু নির্বীর্য স্বামীদের চাপা কষ্ট অথবা তাদের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ এ গল্পের আধেয় নয়। বরং এটা জানা গুরুত্বপূর্ণ যে শাওন মাসের তেরো তারিখ রাত দেড়টায় মুনতাহার কল লিস্টের শেষ নামটি আমার হবার পরও ফুটফুটে বাচ্চাটির ভার্চুয়াল বাবা হতে আমি অস্বীকার জানাই। এর কারণ হয়তো পুরান ঢাকার নিম্ন আদালতের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ যেখানে দিনের পর দিন হাজিরা দিয়ে আমি ক্লান্তি বোধ করি এবং এই বোধ আমাকে আরও অনেক কিছু অস্বীকার করাতে বাধ্য করে। আদালতে দাঁড়িয়ে আমি শুধু তাকিয়ে থাকি সামনে বসা ছেলেটির দিকে যে শাওন মাসের তেরো তারিখ কোনো এক নকিয়া এন৯৫ থেকে বেরিয়ে এসে ভিন্ন বাস্তবতার মুখোমুখি করেছে আমাকে।

পুনশ্চ: নকিয়া কথা দিয়েছে, ছেলেটির লেখাপড়া এবং আমার চলমান মামলার যাবতীয় খরচ চালিয়ে যাবে আজীবন।

____________________________
- ইশতিয়াক জিকো / ১ আগস্ট ২০০৮ / ঢাকা

2 comments:

Anonymous said...

ভাষা, বর্ণনাভঙ্গি, বিষয়, কল্পনাশক্তি- সবই দুর্দান্ত।
এই লেখা পড়ে বুঝলাম, কত সেকেলে রয়ে গেছি...

toxoid_toxaemia said...

জিকো ভাই টাইপের একটা সেইরকম গল্প হইছে।

Post a Comment