Sunday, February 3, 2008

ইউনিকোড পাঠ ০২

আচ্ছা, ইউনিকোড জানা থাকলে কি লোডশেডিং ঠেকানো যায়? ইউনিকোড কি জেনারেটর বা আইপিএস-এর কাজ করে? অথবা ইউনিকোড কোম্পানির জুতা কি টেকসই?

বাপ! যথেষ্ট!

কোনো বন্ধু আপনাকে এমন সব প্রশ্ন করলে বুঝবেন, তাঁর সময় হয়েছে এ লেখা পড়ার।

দ্বিতীয় কিস্তি পড়া যাক এবার।
____________________________________
দুই.
ইউনিকোডের আগে কম্পিউটারে হাজারটা ক্যারেক্টার এনকোডিং পদ্ধতি ছিল। তার একেকটা মান ছিল একেক রকম। কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো নিজেদের দরকারে ভিন্ন ভিন্ন এনকোডিং অনুসরণ করত। ফলে বহুভাষা নিয়ে কাজ করার সময় কম্পিউটারে কয়েক ধরনের এনকোডিং স্ট্যান্ডার্ড ব্যবহারের দরকার হতো। আবার স্ট্যান্ডার্ডের আকারও এত বড় ছিল না যে এক স্ট্যান্ডার্ডে সব বর্ণ যুক্ত করা যাবে। বিভিন্ন এনকোডিং স্ট্যান্ডার্ড সাপোর্ট দিতে হলে ডেটা করাপ্টের আশঙ্কা থাকত।

নব্বুই দশকের গোড়ার দিকে চালু হয় ইউনিকোড। এটি বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত একটি আন্তর্জাতিক বর্ণ সংকেতায়ন ব্যবস্থা। এতে প্রতিটি ভাষার অক্ষরের জন্য আলাদা আলাদা কোড বা নম্বর বরাদ্দ থাকে। ফলে কম্পিউটারে একাধিক ভাষার বর্ণ নিয়ে কাজ করা, তা বিশ্বব্যাপী বিনিময় করা বেশ সহজ হয়ে যায়। এ ব্যবস্থা প্ল্যাটফর্ম, প্রোগ্রাম ও ভাষার জটিলতামুক্ত। যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান এ স্ট্যান্ডার্ড রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে থাকে।

বর্তমানে এ কনসোর্টিয়ামের সদস্য হিসেবে শীর্ষস্থানীয় কম্পিউটার পণ্য নির্মাতা, সফটওয়্যার কোম্পানি, ডেটাবেজ কোম্পানি, গবেষণাকেন্দ্র, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন ধরনের সংগঠনের পাশাপাশি রয়েছে আন্তর্জাতিক সংগঠন। ইউনিকোড স্ট্যান্ডার্ডের প্রয়োগ, পরিবর্ধন, রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রচারে আগ্রহী যে কেউ এর সদস্য হতে পারে। ইউনিকোর্ড স্ট্যান্ডার্ড সম্পর্কিত কোনো বক্তব্য থাকলে ব্যক্তিগতভাবে কেউ নামমাত্র মূল্যে সদস্য হয়ে তা বলতে পারেন।

ইউনিকোডের প্রথম সংস্করণ মুক্তি পায় ১৯৯১ সালে। পরবর্তীতে ISO/IEC 10646 Universal Multiple-Octet Coded Character Set(UCS)-এর সাথে একসাথে কাজ করে ১৯৯৩ সালে ১.১ সংস্করণ প্রকাশ করে। ১৯৯৬ সালে ইউনিকোড ২.০ প্রকাশিত হয় যেখানে ব্রাহ্মীলিপির অন্তর্ভুক্ত লিপির সঙ্গে বাংলাও যুক্ত হয়। এরপর ১৯৯৮ সালে ইউনিকোড ২.১, ১৯৯৯ সালে ইউনিকোড ৩.০ প্রকাশিত হয়। ২০০৩ সালে ইউনিকোড ৪.০ মুক্তি পায়। ২০০৫-এ এর মুক্তি পায় ৪.১ সংস্করণ। আর এখন এর ৫.০ সংস্করণ চলছে।
____________________________________
ভেবেছিলাম, দুপুরে ভাত খেয়েই তুলে দিবো পরের কিস্তি। টের পেয়ে ঢাকা বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ দিলো সুইচ অফ করে। ফলাফল, দু ঘন্টা ইউনিকোডহীন জীবন। মানে এটাই বাস্তব, বিদ্যুৎ না থাকলে এই ইউনিকোড ফিউনিকোড কোনো কাজে দেয় না।

পরের কিস্তি দিচ্ছি।

No comments:

Post a Comment