দিনলিপি : র্যাবায়িত ফোন
মাস কয়েক আগের ঘটনা।
রাতে ঘরে ফিরে বিশ্রাম নিচ্ছি। হঠাৎ রিং, মোবাইল ফোনে। অচেনা টিঅ্যান্ডটি নম্বর থেকে। ধরলাম। র্যাব-3 থেকে বলছে। আমি জাহিদ জিকো কিনা জানতে চায় ওপাশের ভারি গলা। কণ্ঠ অপরিচিত ।
আমি জাহিদ জিকো নই। জানালাম। নাছোড়বান্দা র্যাব-3। সোজা কথা, আপনাকে আমাদের অফিসে আসতে হবে। একটা অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওয়ারেন্ট আছে।
কী ওয়ারেন্ট, কৌতুহল হয় আমার। এবং ভয়। কোনো শুভাকাঙ্ক্ষী(!) আবার হেনস্থা করতে এ কাজ করছে না তো? বছর দুই আগে র্যাবের কথা বলে দা-চাপাতি নিয়ে এক দল রাতে বাসায় ঢুকে ডাকাতি করেছিল। তার মামলা চলছে এখনও। বিশ্রী স্মৃতি, বাজে অভিজ্ঞতা ।
ওয়ারেন্টে কী লেখা, তা জানাতে বাধ্য নয় র্যাব-3। মৃদু হুমকি, র্যাবের অফিসে না গেলে তারা আমার বাসায় আসতে বাধ্য হবে।
আপনার নাম কী? জানতে চাই। মোসলেমউদ্দিন, ওপাশের কণ্ঠ।
মোবাইল ফোনের অপারেটর বদলেছি সবে। তখনও পরিচিত সবাইকে জানানো হয়নি নতুন নম্বরটা। কোন ব্যাটা যে মোসলেমউদ্দিন সেজে এমন ফাজলামো করছে? র্যাব তিন র্যাব তিন র্যাব তিন। মাথায় কিচ্ছু আসছে না। রাগ-বিরক্ত-ভয় কিছুই না। অনুভূতি শূন্য।
বললাম, অভিযোগ পরিষ্কার করে না বললে যাওয়া সম্ভব না। ফোন কেটে দিই।
ওয়েবসাইট থেকে নম্বর যোগাড় করে ফোন করলাম র্যাবের অফিসে। খোঁজ নিয়ে জানালো, না, র্যাব-3 থেকে কেউ ফোন করেনি আমার নম্বরে। এও বললো, র্যাব ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে কাউকে ফোন করে না। টিঅ্যান্ডটি নম্বরটি টুকে রাখতে বললাম। ফোন রাখার আগে মুখস্থ করা বুলি ছাড়ল র্যাব অফিসের অপারেটর। আরেকবার ফোন করলে যেন 'অতি সত্বর নিকটস্থ থানায়' একটা সাধারণ ডায়েরি করি।
ডায়েরি করা লাগেনি; পরদিন উদ্ধার করেছি ফোনওলাকে। টিএন্ডটি নম্বরটি ছিল বেসরকারি এক টিভি চ্যানেলের। স্বল্প-পরিচিত এক তরুণ প্রযোজক নাকি আমার সঙ্গে 'মশকরা' করতে এমনটি করেছেন!
No comments:
Post a Comment