শোকলিপি : টুশকির জন্য ভালোবাসা
নিতান্ত তুচ্ছ আর ব্যক্তিগত খবর। টুশকি গতকাল নিষ্ঠুর পৃথিবী থেকে চিরমুক্তি পেয়েছে। আমার সবচেয়ে আদরের সঙ্গী।
ছাদে টয়লেট সেরে প্রতি ভোরে সে ঘরে ফেরে। গতকাল ফেরেনি। কেউ নির্মমভাবে পিটিয়ে ফেলে রেখে গেছে তার নিষ্প্রাণ দেহ। বাসার সামনে।
খবরটা প্রথম দেয় উপরতলার ছোট্ট বন্ধু অরুণ।
টুশকি, আমার কাছে, আর দশটা বিড়াল নয়। আমাদের এ অনন্য সম্পর্ক দীর্ঘ সময়ে বোনা; অনেক গভীরে। প্রিয় মানুষকেও যা বলতে পারিনি, টুশকিকে তা বলেছি। মানুষের সাথে সম্পর্কের নানা পরতে আমার ব্যর্থতাবোধ আর গোপন অপরাধবোধের কথা -- সব সে মন দিয়ে শুনত। অব্যক্ত যোগাযোগে কত ভাববিনিময় হতো আমাদের। এভাবে অজান্তে সে আমাকে পোষ মানিয়ে নিয়েছে।
টুশকির নিথর দেহটা মনে করলেই থেকে থেকে কান্না আসছে। আর দুই মাস পর তার পাঁচ বছর হতো। মানুষের ক্যালেন্ডারে হিসেব করলে, ৩৬ বছর।
শোক কাটাতে সাময়িক যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা, নিঃসঙ্গতা বেছে নিয়েছি।
প্রিয়জনের স্মৃতি নাকি ভোলা যায় না। কিন্তু আমি ভোগী মানুষ; ব্যস্ততায় মোহে ঠিক ভুলে যাবো প্রিয় টুশকিকে। শুধু একবার ডুব দিতে চাই গ্রিক পুরাণের সেই বিস্মরণের নদীতে। একবার।
টুশকি, মানুষকে তুমি ক্ষমা কোরো।
- ইশতিয়াক জিকো / ১০ জুন ২০০৯, ঢাকা
_______________________________
প্রাসঙ্গিক ফুটনোট
- ফটো অ্যালবাম: টুশকি ও তার জগৎ
- স্মৃতি পোস্ট : হারিয়ে গিয়েছে, এই তো জরুরি খবর
- পর্যবেক্ষণ : আঁস্তাকুড়ে মরে পড়ে থাকা বেড়াল
- সমবেদনা : ব্যথিত চিতে না-ই বা দিলে স্বান্তনা
- কৃতজ্ঞতা : চেনা-অচেনা সব সমব্যথী বন্ধুদের।
No comments:
Post a Comment